টিআইসি
আমার কর্মস্থলে যোগদান করার পর একটি অপ্রীতিকর ঘটনার কথা জানতে পারি। যা আমাকে বাংলাদেশের একজন নাগরিক হিসেবে লজ্জিত করেছে। ঘটনাটি হল ইউকে থেকে আসা আমার একজন পুরুষ সহকর্মী প্রথম যেবার বাংলাদেশে আসেন। তাকে গাইড করার জন্য আমার একজন নারী সহকর্মী সঙ্গ দিয়েছিলেন। একদিন তারা দুইজন গুলশান এলাকার ফুটপাত দিয়ে হাঁটছিলেন। হঠাৎ নারী সহকর্মী খেয়াল করলেন যে পাশে থাকা পুরুষ সহকর্মী উধাও। কি হল আর কোথায় গেলেন তিনি এই চিন্তায় অস্থির হয়ে পড়লেন তিনি। আর যখন পুরুষ সে সহকর্মী তার সামনে এলেন দেখা গেলো যে,তার কাপড়ে অনেক কাঁদা লেগে আছে আর তা থেকে প্রচণ্ড দুর্গন্ধ বেরোচ্ছে। নারী সহকর্মী তখন দুঃখিত হয়ে জিজ্ঞাসা করলেন যে এটা কীভাবে হয়েছে। আচ্ছা আপনারা বলুনতো কেমন করে হল? এর কারণ ছিল একটি ম্যানহোলের ঢাকনা খোলা ছিল। আর আমার সেই বিদেশি কলিগ ঘুণাক্ষরেও ভাবেননি যে সেই ঢাকনা খোলা থাকবে। সম্ভবত ঘটনাটি সিটি কর্পোরেশনের কর্মীরা ঘটিয়েছেন। অর্থাৎ তারা সুয়ারেজের লাইন পরিষ্কার করার সময় ম্যানহোলের ঢাকনা খুলে না লাগিয়েই চলে গেছেন। এমনটাই হওয়ার কথা ছিল তাই না? কিন্তু মূল ঘটনা হল সেই ম্যানহোলের ঢাকনাটাই ছিলোনা! ভাবতে পারেন। যার ফলে ওই বেচারা হাঁটতে গিয়ে কখন পড়ে গেছেন নিজেও টের পাননি। সম্মানটা থাকলো বলেনতো?
একদিন আমি স্ত্রীকে নিয়ে ফার্মগেট গিয়েছি। ফিরতি পথে কারওয়ান বাজার এলাকা থেকে পুরাতন বিজিএমইএ অর্থাৎ এফডিসির যে রাস্তাটা আছে সেদিক দিয়ে যাচ্ছিলাম। বাইক চালাতে চালাতে হুট করে একটা ঝাঁকি খেলাম! বলেন তো কেমন লাগে? এখানে ঘটনাটা ছিল রাস্তার জমে থাকা পানি যেন খুব সহজে পাশের ড্রেনে চলে যায় সেই জন্য একটা ছোট গোল গর্ত করা হয়েছে! আর তা রাস্তার সাথে একই সমতলে নেই যার ফলে দ্রুতগামী যেকোনো যানবাহনের চালক ওইটা দেখতেই পারবে না! এ ধরনের অব্যবস্থাপনা ঢাকা শহরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে বা আছে। অনেক জায়গায় ম্যানহোলের ঢাকনাটা থাকেনা। কখনোও আবার কোন হৃদয়বান ব্যক্তি একটি বাশ গেঁড়ে সেখানে লাল কাপড় বেঁধে দেন মানুষের সুবিধার জন্য। কিন্তু সবাই কি আর এমন দয়া দেখায়!
এখন প্রশ্ন হল ওই ম্যানহোলের ঢাকনাগুলো কেন থাকছে না। কিংবা যদি চুরি হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ কি ব্যবস্থা নিয়েছেন। আর যদি ভেঙ্গে গিয়ে থাকে তাহলে সেগুলো এত দুর্বল করে বানানো হয়েছে কেন? বা এই সব ক্ষেত্রেই কর্তৃপক্ষের কোনও নজরদারি নেই কেন?